মাম্পস কি? লক্ষণ, চিকিৎসা ও প্রতিকার
- Published: 30-Mar-2023
- Posted: Dr Md Omar Faruk
- Category: শিশুচিকিৎসা
আজ কাল প্রায়ই দেখা যাচ্ছে কিছু মা তাদের ছেলে , মেয়েদের নিয়ে গলা ফুলে গেছে বা কান স্যাকা ফুলে গেছে, কিছু খেতে পারেনা, খুব জ্বর , এই কথা গুলো বলছে। আজ আমরা শিখবো সেই রোগ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা। এই রোগটির নাম হচ্ছে মাম্পস, যা আমাদের অনেকেরই জানা ।
মাম্পস কি?
মাম্পসের প্রধান লক্ষণ হলো জ্বর এবং দুই গালে (কানের একটু সামনের অংশে বা একদিকের পেরোটিড গ্রন্থি ফুলে যাওয়া ও তাতে ব্যথা। গ্রন্থি ফুলে যাওয়ার দু-এক দিন আগে থেকে পাঁচ দিন পর পর্যন্ত মাম্পস সংক্রামক থাকে। আক্রান্ত শিশুকে এ সময় ঘরে রাখাই ভালো। মাম্পস এমনিতে তেমন গুরুতর রোগ নয়, সাধারণ একটি ভাইরাসজনিত রোগ।
লক্ষনঃ
শরীরে রোগের জীবাণু প্রবেশের ১২-২৫ দিনের মাথায় উপসর্গ দেখা দেয়। শুরুতে জ্বর, ক্লান্তি, মাথাব্যথা, বমি ও বমি ভাব দেখা দেয়। এ সময় খিদেও লোপ পায়। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ শিশুর এভাবেই মাম্পস দেখা যায়। প্যারোটিড লালাগ্রন্থি ফোলার কারণে কানের সামনের ডান ও চোয়ালের উপরিভাগের অংশটি থাকে ফোলা, যা কখনো কখনো কানের লতিকে পেছনের দিকে ঠেলে রাখে। শিশুর খাবার গিলতে ও চিবোতে সমস্যা দেখা দেয়। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অন্য পাশের প্যারোটিড গ্ল্যান্ডও ফোলে। পরে ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে লালাগ্রন্থি ফোলা কমে আসে।
মাম্পস কিভাবে ছড়ায়?
এটা বেশি ঘটে শীতের শেষ ও বসন্তকালে। মাম্পস মূলত ছড়ায় আক্রান্ত রোগীর সরাসরি সংস্পর্শ, কাশি–হাঁচি কিংবা লালা-প্রস্রাব ইত্যাদির মাধ্যমে।
মাম্পস রোগের জটিলতাঃ
কিন্তু এ রোগ থেকে মস্তিষ্কের প্রদাহ বা শুক্রাশয়ের প্রদাহের মতো নানা জটিলতা হতে পারে।
মাম্পস রোগে করনীয়ঃ
মাম্পসে আক্রান্ত শিশুর যত্ন নিতে হবে। ব্যাথার কারণে তারা খেতে চায় না। তরল সহজপাচ্য খাবার একটু একটু করে দিতে হবে। টক ও অ্যাসিডজাতীয় খাবার খেলে ব্যাথা বাড়ে। পানিস্বল্পতা যেন না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
চিকিৎসাঃ
১। ব্যথা ও জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল সেবন করা যায়।
২। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিভাইরাল দেওয়া যেতে পারে।
৩। তাছাড়া আক্রান্ত স্থানে হাল্কা কুসুম কুসুম গরম স্যাক নেয়া যেতে পারে।
৪। খেয়াল রাখতে হবে আক্রান্ত স্থানে যেনো ঠান্ডা না লাগে।
৫। শিশুকে লজেন্স চুষতে দিলে তা লালাগ্রন্থির রস নির্গত হতে সাহায্য করে, এতে করে লালাগ্রন্থির ফোলা তাড়াতাড়ি কমে আসে।
৬। অণ্ডকোষ ফুলে গেলে বরফ প্যাক ব্যবহার করা যায়। ফোলা কমাতে ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
প্রতিরোধঃ
টিকার মাধ্যমে মাম্পস প্রতিরোধ করা যায়। শিশুদের এমএমআর বা এমআর টিকা প্রথম ডোজ ১২ থেকে ১৫ মাস বয়সে, দ্বিতীয় ডোজ ছয় থেকে আট বছর বয়সে দিতে হয়। দ্বিতীয় ডোজ না নেওয়া হলে বয়ঃসন্ধিকালের আগে একটা ডোজ নেওয়া প্রয়োজন। মাম্পস আক্রান্ত শিশুর ১০ দিন পর্যন্ত বিদ্যালয়ে না যাওয়া
।